শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে মাদরাসায় ওয়াকফকৃত জমি নিয়ে বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩৩ জন আহত হয়েছে।
এরমধ্যে আশঙ্কা জনক অবস্থায় ৪ জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং জড়িত সন্দেহে উভয় পক্ষের ৮ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) উপজেলার কলসপাড় ইউনিয়নের গোল্লারপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সন্ধায় নিশ্চিত করেন থানা পুলিশ।
জানা গেছে, প্রায় ৪০ বছর আগে গোল্লারপাড় ইবতেদায়ী মাদরাসার নামে ওই এলাকার মৃত সফর উদ্দিন, মৃত নীল মাহমুদ ও মৃত ছাবেদ আলী মিলে মোট ১ একর ৫ শতাংশ জমি ওয়াকফ করে দেন। পরবর্তীতে ইবতেদায়ী মাদরাসা বিলুপ্ত হওয়ায় ওয়াকফকৃত সম্পত্তি দাতার ওয়ারিশগণ তসরুপ করে আসছিল। একপর্যায়ে গোল্লারপাড় মদিনাতুল উলুম কওমি মাদরাসা নামে নতুন একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হলে ওই সম্পত্তি এ মাদরাসার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। এমতাবস্থায় গোল্লারপাড় জামে মসজিদ কমিটি গঠন নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে ওয়াকফকৃত সম্পত্তি ওই কওমি মাদরাসার কাজে ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে কওমি মাদরাসার সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান উসমান গনি ও সাধারণ সম্পাদক হাফেজ আলীর মাঝে এ নিয়ে বিরোধ বাঁধে। উসমান গনি চলতি বোরো আবাদে ওই জমি চাষ করে লাগানোর প্রস্তুতি নিলে সাধারণ সম্পাদক হাফেজ আলীর লোকজন শুক্রবার ক্ষেত লাগিয়ে ফেলে। এ ঘটনায় শনিবার সকাল ৯টার দিকে সভাপতি উসমান গনির নেতৃত্বে কয়েকশ লোকজন সাধারণ সম্পাদক হাফেজ আলী ও তার স্বজনদের বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালায়। এসময় ৩টি দোকান ঘর, বসতবাড়ি ও ৩টি অটোরিকশা ভাংচুর করা হয়। হামলাকালে উভয়পক্ষের মাঝে দুই ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে নারীসহ ৩৩ জন আহত হন।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকজন স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হলেও গুরুতর আহত মামুন, আজাদ, মাসুদ ও বাক্কি মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ সন্ধায় বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভূইয়া নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৮ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। অভিযোগ প্রাপ্তির পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উভয় পক্ষই থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।