• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৭:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
২৫ বছরে বিয়ে না করলেই জনসম্মুখে অদ্ভুত শাস্তি! শেরপুরে পথচারী ও অটোরিকশা চালকদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন সহ মাথায় সান ক্যাপ পরালেন পৌর মেয়র লিটন শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের সবুজ বন পুড়ে ছাই সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ীতে বন্যহাতির আক্রমণে কৃষকের মৃত্যু শেরপুরে প্রচন্ড তাপদাহের কারনে পৌরসভার উদ্যোগে রাস্তায় পানি ছিটানো ও পথচারী ও শ্রমীকদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি বিতরণ শেরপুরে নালিতাবাড়ী থানা ও ডিবি পুলিশের জব্দকৃত ১৮১ বোতল ভারতীয় মদ ধ্বংস শেরপুর প্রেসক্লাবের বিতর্কিত কমিটি ভেঙ্গে নয়া কমিটি ঘোষণা  শ্রীবরদীতে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে কিন্ডারগার্টেন গুলোতে পাঠদান পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন পরীমণির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পিবিআই, শুনানি আজ
বিজ্ঞপ্তিঃ
🌏 শেরপুর জেলার প্রতিমুহূর্তের খবর পেতে ভিজিট করুন www.sherpurtoday.com ও www.facebook.com/sherpurtoday শেরপুর টুডে ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন www.youtube.com/sherpurtoday 🌏 আপনার কোম্পানি/পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন : ০১৯১৪-৮৫৪৪৩৯ 🌏

চুরি ঠেকাতে কবরের ওপর লোহার গ্রিল

শেরপুর টুডে ডেস্ক | শেরপুরটুডে.কম
আপডেটঃ : সোমবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৪

শেরপুর সদর উপজেলায় কবর থেকে মরদেহ চুরির ঘটনা বেড়েছে। চুরি ঠেকাতে বিভিন্ন কবরস্থান পাকা করাসহ দেওয়া হচ্ছে লোহার গ্রিল। এলাকাবাসী বলছেন, স্বজনদের শেষ স্মৃতিচিহ্নটুকু রাখতেই এমন পদক্ষেপ নিচ্ছেন তারা। এদিকে অভিযোগের ভিত্তিতে চোরচক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সম্প্রতি শেরপুর সদরের কামারিয়া ইউনিয়নের সূর্যদী পশ্চিমপাড়া গ্রামসহ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকায় সরকারি কবরস্থান না থাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় স্বজনদের মরদেহ। আর পাহারার ব্যবস্থা না থাকায় একের পর এক পুরোনো বেশির ভাগ কবর থেকেই চুরি হয়েছে সেই মরদেহ। তাই চুরি ঠেকাতে বেশির ভাগ কবরের ওপরে দেওয়া রয়েছে লোহার গ্রিল। মৃত স্বজনদের শেষ স্মৃতিচিহ্নটুকু রাখতেই বাড়তি খরচ করে অভিনবভাবে গ্রিল দিচ্ছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ইসলামি রেওয়াজ অনুযায়ী মৃত্যুর পর মরদেহ দাফন হয় কবরস্থানে। কিন্তু দাফনের কিছুদিন পর শেরপুরের বিভিন্ন এলাকার কবরস্থান থেকে চুরি হচ্ছে সব কঙ্কাল। ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক কবরে লোহার গ্রিল স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে গত দুই বছরে ওই ইউনিয়ন থেকে দেড় শতাধিক কঙ্কাল চুরি হয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, একটি কবর গ্রিল স্থাপনের জন্য খরচ হয় আট থেকে ১০ হাজার টাকা। ফলে বাড়তি টাকা দিয়ে এসব করতে অনেকে হিমশিম খাচ্ছেন।
সূর্যদী পশ্চিমপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আকবর আলীর কবর গ্রিল করা। কথা হয় তার ছেলে হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার চাচি, দাদি, দাদা ও জেঠার মরদেহ কবর থেকে অনেক আগে চুরি হয়েছে। এ ছাড়া এলাকার অনেকের মরদেহ চুরি হচ্ছে।’
পশ্চিমপাড়া এলাকার মনির মিয়া বলেন, ‘আমরা কবর পাকা করি এবং কবরের ভেতরে মাটির ওপরের অংশ গ্রিল করে আটকে রাখি। সহজেই যেন চোর মরদেহ উত্তোলন করতে না পারে।’
স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল মিয়া বলেন, কিছুদিন আগে এ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে হাসমত আলীর মায়ের মরদেহ চুরি হয়েছে। ফজরের নামাজের পর আমরা কয়েকজন হাঁটার সময় কবর খোঁড়া দেখতে পাই। পরে আমরা সেখানে গিয়ে দেখতে পাই যে কবরে মরদেহ নেই। আমার মনে হয়, রাতের আঁধারের কোনো একসময় চোরেরা কবর খুঁড়ে মরদেহ চুরি করে নিয়ে যায়।
ওই গ্রামের কয়েকজন রাজমিস্ত্রি জানান, ‘একটা কবর পাকা করতে খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। আর গ্রিল করতে আরও খরচ হয় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে একটা কবরের প্রায় ১৫ হাজার টাকার মতো খরচ পড়ে। যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো তারা এভাবে গ্রিল দিয়ে কবর দিতে পারে কিন্তু সবাই পারে না।’
মানবাধিকার সংস্থা ও এনজিও সৃষ্টি ইউম্যান রাইটস সোসাইটির শেরপুর জেলার সভাপতি আলমগীর আল-আমিন বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে থাকা কবর থেকে মরদেহ চুরি হচ্ছে। আবার সামাজিক কবরস্থান থেকেও একাধিক মরদেহ এক রাতেই চুরির ঘটনা ঘটেছে। যদিও ইতোমধ্যে পুলিশ চক্রটির বেশ কয়েকজন সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। আমরা আশা করব, মুসলমানদের শেষ স্মৃতিচিহ্ন কবরস্থানে থাকা মরদেহটি রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি সামাজিক কবরস্থানগুলোতে নিজস্ব সমাজের উদ্যোগে পাহারা ও আলোর ব্যবস্থা করলে আমার মনে হয়, অনেকটাই চুরির ঘটনা কমে আসবে।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল্লাহ বলেন, গেল বছরের সেপ্টেম্বরে দুটি পৃথক মামলা হয়। এরপর জেলা পুলিশের তৎপরতায় দুই কেমিক্যাল ব্যবসায়ীসহ চার চোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয় স্ক্রু ড্রাইভার, প্লাস, ব্যাগ। পরে গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদানের পর তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এরপর থেকেই চুরি বন্ধ হয়ে যায়। তবে এখনো কিছু কিছু জায়গায় কবরের ওপরে গ্রিল দেওয়া দেখা যায়। এতে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ পুলিশের এই কর্মকর্তার। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ