• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের সবুজ বন পুড়ে ছাই সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ীতে বন্যহাতির আক্রমণে কৃষকের মৃত্যু শেরপুরে প্রচন্ড তাপদাহের কারনে পৌরসভার উদ্যোগে রাস্তায় পানি ছিটানো ও পথচারী ও শ্রমীকদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি বিতরণ শেরপুরে নালিতাবাড়ী থানা ও ডিবি পুলিশের জব্দকৃত ১৮১ বোতল ভারতীয় মদ ধ্বংস শেরপুর প্রেসক্লাবের বিতর্কিত কমিটি ভেঙ্গে নয়া কমিটি ঘোষণা  শ্রীবরদীতে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে কিন্ডারগার্টেন গুলোতে পাঠদান পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন পরীমণির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পিবিআই, শুনানি আজ শেরপুরে কুড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদককে কুপিয়েছে প্রতিপক্ষ শ্রীবরদীতে  আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
বিজ্ঞপ্তিঃ
🌏 শেরপুর জেলার প্রতিমুহূর্তের খবর পেতে ভিজিট করুন www.sherpurtoday.com ও www.facebook.com/sherpurtoday শেরপুর টুডে ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন www.youtube.com/sherpurtoday 🌏 আপনার কোম্পানি/পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন : ০১৯১৪-৮৫৪৪৩৯ 🌏

একমাত্র ইসলামই দিয়েছে ‌’নারীর সম্মান, মর্যাদা ও অধিকার’

শেরপুর টুডে ডেস্ক | শেরপুরটুডে.কম
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৩

বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যে বিষয়টি নিয়ে পাশ্চাত্য খুবই শোর গোল করছে। যার সূত্র ধরে ইসলাম বিরোধী অপশক্তি গুলোও ইসলামের উপর কালিমা লেপনের অপচেষ্টায় আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে, পশ্চিমাদের এজেন্ট, কুফরী শক্তির দালালরা ইসলাম ও মুসলিমদের তাহযীব-তামাদ্দুনকে সমূলে ধ্বংস করে মুসলিম উম্মাহকে চিরতরে পঙ্গু করার জন্য যেই ভয়ংকর মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে তার নাম হচ্ছে -নারী অধিকার, নারী স্বাধীনতা। আর এ বিষয়টির ক্ষেত্রে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গী কি সে সম্পর্কে অনেকেই অনেকভাবে, অনেক আঙ্গিকে লিখেছেন। আমি আমার এই লেখায় কুরআন-সুন্নাহ এবং বাস্তবতার আলোকে আমার উপলব্ধি টুকু শেয়ার করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

বর্তমান পাশ্চাত্য এবং ইসলাম বিদ্বেষী অপশক্তি আজ অত্যন্ত কৌশলে মুসলিম উম্মাহর নারীদেরকে টার্গেট করেছে। তারা মুসলিম পারিবারিক ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে দেয়ার নীল নকশা বাস্তবায়নের জন্য নারীদেরকে রাস্তায় নামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। অধিকার কিংবা আর্থিক স্বনির্ভরতার টোপ ফেলে তারা সহজ-সরল মুসলিম রমণীদেরকে হিজাব ও পর্দার সবচেয়ে নিরাপদ স্থান তাদের ঘর থেকে তাদেরকে মাঠে ময়দানে টেনে আনার অপচেষ্টা করছে।

বাস্তবতার মাথা খেয়ে স্বার্থান্ধ একদল অপরদিকে বলে চলেছে যে, ইসলাম নারীকে শেকল পরিয়ে চার দেয়ালের মাঝে বন্দী করে রেখেছে। ইসলাম নারীকে তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। তাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে জুলুমের বোঝা -নাউযুবিল্লাহ।

নারী সম্পর্কিত এধরণের হাজারো অভিযোগ আজ চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে ইসলামের উপর। বাঁধ ভাঙ্গা স্রোতের মতো বিষোদ্গারের ঢল নামানো হচ্ছে। অথচ বাস্তবতা হলো এর সম্পূর্ণ বিপরীত। আমি বলবো, কেবলমাত্র ইসলামই এমন এক দীন বা জীবন ব্যবস্থা, যা নারী জাতিকে তাদের ন্যায্য অধিকার দিয়েছে। তাদেরকে সমাসীন করেছে সম্মান ও মর্যাদার সর্বোচ্চ আসনে। আর হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ই একমাত্র ব্যক্তিত্ব যিনি নারীদের সকল অধিকার আদায় করে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। সমাজের বুকে নারীদের সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করে দেখিয়ে দিয়েছেন। যদি আমরা ইসলাম পূর্ব আইয়্যামে জাহেলিয়াত ও ইসলাম পরবর্তী সময়ের নারীদের অবস্থা ও অবস্থানের দিকে তাকাই তাহলে বিষয়টি দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট হয়ে যাবে।

নারী জন্মের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলাম:

ইসলাম আসার পূর্বে সেই আইয়ামে জাহেলিয়াতে নারীদেরকে সামাজিক মর্যাদা দেয়া তো দূরের কথা তাদের বেঁচে থাকার অধিকার পর্যন্ত ছিলো না। কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণের কথা শ্রবণ করার সাথে সাথেই সকলের মুখ কালো হয়ে যেতো। তাকে জীবন্ত মাটিতে পুঁতে ফেলার জন্য সকলে আয়োজনে ব্যতি ব্যস্ত হয়ে উঠতো এবং এই কন্যা সন্তানকে মাটিতে জীবন্ত প্রোথিত করাকেই নিজেদের জন্য সম্মান, মর্যাদা ও পুন্যের কাজ বলে মনে করতো। জাহেলী যুগের সেই সময়কার ভয়বহ এই অবস্থার কথা তুলে ধরে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-
“আর যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়; তখন তার চেহারা কালো হয়ে যায়। আর সে থাকে দুঃখ ভারাক্রান্ত। তাকে যে সংবাদ দেয়া হয়েছে, সে দুঃখে সে কওমের থেকে আত্মগোপন করে। আপমান সত্ত্বেও কি একে রেখে দেবে, না মাটিতে পুঁতে ফেলবে? জেনে রেখ, তারা যা ফয়সালা করে, তা কতই না মন্দ!” (সুরা নাহল: আয়াত ৫৮, ৫৯)
ইসলাম পূর্ব আরব সমাজে নারীদের অবস্থা এমনই ছিলো। এমনকি ইসলাম ব্যতীত অন্য সকল ধর্মে আজ পর্যন্ত নারী জাতির অধিকারের কোনো স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।
হিন্দুধর্মে নারী জাতিকে মৃত্যু, নরক, সর্প, বীষ ও আগুন থেকেও মারাত্মক বলা হয়েছে। স্বামী ছাড়া নারী জাতির আলাদা কোনো অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয় নি। যার কারণে স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকেও তার স্বামীর সাথে সহমরণে যেতে বাধ্য করার কথা বলা হয়েছে।
খৃষ্টান ধর্মে নারী জাতিকে চরম লাঞ্চনার বস্তু বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাই তো খৃষ্টান পাদ্রী মি: সেন্ট টার্টুলিয়ামের মতে, নারী হচ্ছে বন্য জন্তুর চেয়েও অধিক বিপদজনক। অন্য আরেক পাদ্রী সেন্ট ক্রিয়ান নারীকে বীষধর সাপের সাথে তুলনা করে তার থেকে দূরে সরে থাকতে বলেছেন। সপ্তদশ শতকে খৃষ্টধর্মের রাজধানী রোমে বিত্তবানদের একটি কাউন্সিল সমবেত সকল শীর্ষ ব্যক্তি এই মর্মে সর্বসম্মতিক্রমে একমত হয়েছিল যে, নারীর কোন আত্মা নেই।
ইহুদী ধর্মে নারীকে পুরুষের জন্য প্রতারক বলা হয়েছে। তাদের মতে একজন সতী নারীর চেয়ে একজন পাপিষ্ট পুরুষ বহু গুণে শ্রেষ্ঠ।
বৌদ্ধধর্মে কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করাকে অলক্ষণীয় বলে মনে করা হয়। নারীর কোনো অধিকার আছে বলে স্বীকৃতি দেয় না।
এভাবে ইসলাম ছাড়া অন্য সকল ধর্মেই নারী জাতিকে পাপিষ্ট, অলুক্ষুণে, অপয়া ও ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদেরকে কোনো অধিকার দেয়া তো দূরের কথা, তাদেরকে মানুষ বলেই স্বীকার করা হয়নি। তারা নারীদেরকে কেবলমাত্র ভোগের পণ্য হিসেবেই গণনা করতো। -এমনিভাবে সর্বত্রই যখন নারী জাতির এমন লাঞ্চনা-গঞ্জনা আর অসম্মান ঠিক সেই বিভীষিকাময় মুহূর্তে ইসলাম এসে তৎকালীন সেই বর্বর যুগের অমানুষিক জুলুম থেকে নারীকে মুক্ত করেছে। ইসলামই একমাত্র দীন -যা নারী জাতিকে ফিরিয়ে দিয়েছে তাদের যথাযথ অধিকার।
ইসলাম এসে ধাপে ধাপে নারী জাতিকে তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা, সম্মান ও মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। যেই সমাজে নারী জন্মই পাপ বলে গণ্য হতো সেখানে ইসলাম সর্বপ্রথমই নারীজন্মের অধিকার নিশ্চিত করেছে। নারী সন্তানকে হত্যাকারীদের জন্য কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছে। ঘোষণা করেছে,

وَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ. بِأَيِّ ذَنْبٍ قُتِلَتْ
“আর স্মরণ করো সেই দিনের কথা! যখন জীবন্ত কবরস্থ কন্যাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে?”
(সুরা তাকউইর, আয়াত ৮-৯)

কন্যা সন্তানের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় ইসলাম:
সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে এটি নির্ধারণ করেন স্বয়ং মহান আল্লাহ। তিনি যাকে চান তাকেই নির্দিষ্ট লিঙ্গের সন্তান দান করেন। কাউকে আবার নি:সন্তান করে রাখেন। সুতরাং নি:সন্তানদের তুলনায় কন্যা সন্তানের অভিভাবকগণ যে কতো অকল্পনীয় মর্যাদার অধিকারী এবং কন্যা সন্তানও যে সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান হতে পারে সে সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে-
“আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি যা চান সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে পুত্র ও কন্যা উভয়ই দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করেন। তিনি তো সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।” (সুরা শু’রা: আয়াত ৪৯, ৫০)
কুরআনের পাশাপাশি হাদীসের মাঝেও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কন্যা সন্তানদেরকে খুবই সম্মান ও মর্যাদার উপলক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে,
“ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত; তিনি বলেন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন; যে ব্যক্তির একটি মেয়ে আছে আর সে তাকে তুচ্ছ মনে করে নাই, অপমানিত করে নাই এবং ছেলেদের উপর প্রাদান্য দেয় নাই। আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।” (সুনানে আবু দাউদ)
আরো ইরশাদ হয়েছে,
“আনাস ইবনে মালেক রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন; যে ব্যক্তি দুটি কন্যা সন্তান সাবালক হওয়া পর্যন্ত লালন-পালন করল সে কেয়ামতের দিবসে আমার সাথে থাকবে।” (সহীহ মুসলিম)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,
“উকবা ইবনে আমের হতে বর্ণিত: তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন; যে ব্যক্তির তিনটি কন্যা সন্তান আছে অত:পর সে তাদের নিয়ে ধৈর্য্য ধারন করে এবং তাদেরকে ভরণ-পোষণ দিয়ে খাওয়ায় পান করায় তার নিজ সম্পদ থেকে, ক্বিয়ামতের দিবসে ঐ কন্যা সন্তানগুলো তার জন্য জাহান্নাম থেকে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াবে।” (সুনানে ইবনে মাজা)

আরো ইরশাদ হয়েছে,
“আবু সাঈদ খুদরী হতে বর্ণিত: তিনি বলেল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন; যে ব্যক্তির তিনটি কন্যা সন্তান আছে, সে তাদেরকে আদব শিক্ষা দিয়েছে এবং বিবাহ দিয়েছে এবং তাদের সাথে সদাচরন করেছে, তার জন্য রয়েছে জান্নাত।” (সুনানে আবু দাউদ)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,

أكمل المؤمنين إيمانا أحسنهم خلقا. وخياركم خيار لنسائه وبناته
“পরিপূর্ণ মু’মিন হলো সেই ব্যক্তি, যার আখলাক-চরিত্র উত্তম। আর তোমাদের মধ্যে সেই সর্বোত্তম, যে তার স্ত্রী-কন্যাদের কাছে উত্তম।””


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ